নাম জানা হয় নি …

‘রোজেদার কে লিয়ে এক ফল কি টোকরি বনা দোগে আপ?’ সর্দারজিকে শুধোলে তুমি। ঝটপট উঠে দাঁড়ালেন সর্দারজি, ‘জরুর জি’। তাড়াতাড়ি সামনে থেকে সরিয়ে নিলেন আগে-থেকেই রেখে দেওয়া দুটো ফলের বাস্কেট, হয় তো তত ভালো ফল ছিল না তাতে, কিংবা, কে জানে, ফলগুলো হয় তো ইফতারে ব্যবহৃত হবার জন্য অতটা পবিত্র ছিল না। পেছন থেকে আরেকটা বাস্কেট বের করে দিলেন তিনি। ‘অওর ইয়ে দোনো মেরি তরফ সে’, বলে আরো দুটো কমলালেবু চাপিয়ে দিলেন সর্দারজি, ভরে ওঠা বাস্কেটের ওপরে। কোথাও একটা মানুষ পবিত্র মাসভর উপবাস করছে, তার দোকানের এই ফল সেই পবিত্র উপবাসের অবসান ঘোষণা করবে, এই বিশ্বাস হয় তো তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। দুজনকার ধর্মবিশ্বাস আলাদা, তবু কীভাবে যেন দুটি স্রোত একসাথে মিশে গেল আজ, এই ফলের দোকানে। … More নাম জানা হয় নি …

জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – দ্বাদশ ও শেষ পর্ব

ঘুম, কিন্তু ঘুম নয়, আধঘুম যেন, ঘুমের মধ্যেই শুনতে পাচ্ছি, ধাবার ভেতরে বক্সে পুরনো দিনের হিন্দি গান বাজছে – মহম্মদ রফি, আশা ভোঁসলে, এটা কি বাণী জয়রাম? – শুনতে পাচ্ছি, ওরা লস্যি খাবে বলছে, – শুনতে পাচ্ছি, ধাবার মালিক বলছে, গরমি বহোত হ্যায়, য়ঁহা সে দো কিলোমিটার আগে এক নহর হ্যায়, বঁহা ঠন্ডা পানি মিলেগা, চাহো তো জা কর নহা কে আ জাও। -শুনতে পাচ্ছি, ওরা বলছে, দরকার নেই – শুনতে পাচ্ছি, ওরা খাবার অর্ডার দিচ্ছে। কী রকম একটা বেহুঁশ অবস্থায় ছিলাম, খানিকক্ষণের জন্য। ধীরে ধীরে ঘোরভাবটা কাটল। উঠে জল চাইলাম। পর পর দু গ্লাস জল খেলাম। … More জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – দ্বাদশ ও শেষ পর্ব

জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – একাদশ পর্ব

দাঁড়ালে তাও দু চারটে কথা বলার সুযোগ জোটে, একনাগাড়ে চলতে থাকলে খানিক বাদে একটা একঘেয়েমি গ্রাস করে। এই অন্ধকার, ট্রাকের সাথে নেগোশিয়েশন – মাথাটা কেমন যেন জ্যাম হয়ে যায়। নিজের মনেই একটা গান ধরলাম, তারপরে কী মনে হল, গানটা থামিয়ে মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল একটা ছড়া – একেবারেই আনরিলেটেড, আমাদের ছোটো নদী চলে আঁকেবাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে। যতটা মনে ছিল, বিড়বিড় করে বকলাম, তার পরেই মাথায় এল জব কোই বাত বিগড় জায়ে – খানিক পরে খেয়াল করলাম আমি আবার ছড়া বলছি – আমি যখন ছোট ছিলাম, খেলতে যেতাম মেঘের দলে। … More জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – একাদশ পর্ব

জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – দশম পর্ব

কিন্তু কোথা হইতে কী হইয়া গেল, একটা জায়গায় এসে – বুঝতে পারি নি, বাইকের চাকা চলে গেল বরফের ওপরে, দুদিকে এবং রাস্তার মাঝেও চাপ চাপ বরফ, জাস্ট সামনের গাড়ির টায়ারের দাগ ধরে চলা উচিত এইসব রাস্তায়, চলছিলামও তাই, কিন্তু বরফে একবারের জন্য চলে গেল সামনের চাকা, স্কিড করল, আমি ব্যালেন্স হারালাম, এবং ছিটকে পড়লাম। … More জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – দশম পর্ব

জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – নবম পর্ব

আমি, বিবেক আর প্রিয়াঙ্কা মিলে আলোচনায় বসলাম আবার। কী করা উচিত। আমি বললাম, ওয়র্স্ট কেস ধরে নিয়ে প্ল্যান করা উচিত। আমরা এগবো, যদি খারদুং গ্রামে ঘর না পাই, তা হলে আবার পঁচিশ কিলোমিটার ফিরে আসতে হবে। এখান থেকে লে একশো পঁচিশ কিলোমিটার। আমার কাছে যা তেল আছে, তাতে লে পর্যন্ত পৌঁছনো যাবে, তবে এর পরে অর্ধেক রাস্তা আপহিলস, তেল বেশি টানবে, তাই ওয়র্স্ট বিবেচনা করতে হলে আগে তেলের খোঁজ নিতে হবে। তেল পাওয়া গেলে এক রকমের প্ল্যান, না পেলে আর কোনও রিস্ক নেবার নেই, আমরা এখানেই রাতে থেকে যাবো। … More জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – নবম পর্ব

জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – অষ্টম পর্ব

প্রথমে সুমিত, তারপরে আমি, তারপরে বিবেক জড়িয়ে ধরলাম ওকে। গুরু, কী করেছো? ছবি তুলব কী, নিজের চোখকে তখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। গুরদীপ, জাস্ট কিছুই হয় নি, এই রকম একটা ভাবে হেসে বলল, কোই বড়ি বাত নেহি, আমি মাউন্টেনিয়ারিং-এর ট্রেনিং নিয়েছিলাম কিছুদিন। এইটুকু নামাওঠা তো আমার কাছে সাধারণ ব্যাপার।

আমি তখন ভাষা হারিয়ে ফেলেছি, কী বলব কিছু বুঝতে না পেরে ওর হাতদুটো চেপে ধরলাম। জাস্ট দুটো গ্লাভসের জন্য এত বড় ঝুঁকি নিতে পারে কেউ! একটা সম্পূর্ণ অপরিচিত লোকের জন্য। দুদিনের আলাপ, দুদিন বাদেই আবার যে যার বাড়ি চলে যাব, আর কোনও দিনও দেখা হবে কিনা ঠিক নেই – আমি পারতাম? … More জুলে, আবার, জুলে লাদাখ – অষ্টম পর্ব