জলু – সপ্তম পর্ব

এই বার একটু ভয় করতে শুরু করল, ফরেস্ট রেঞ্জার অফিসার, না জানি কি জাঁদরেল লোক হবেন টবেন। ধমকেই যদি ভির্মি খেয়ে যাই, তা হলে বার্গেইন করব কী করে? আমরাই উদ্যোগী হয়ে গঞ্জ খুঁজতে বেরিয়ে পড়লাম, পেয়েও গেলাম একটু হাঁটতেই, ছোট্ট গ্রামের মধ্যেই আরও ছোট্ট একটা চত্বরে গুটিকয় দোকান, তার নাম গঞ্জ। বোদাগঞ্জে তখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি, তাই বেলাবেলি এখানে লোকে দোকানবাজার সেরে ফেলে সন্ধের মধ্যে বাড়ি ঢুকে পড়ে, বন্য জন্তু না থাকলেও অন্ধকারে জঙ্গলে পথ হারয়ে ফেলা বিচিত্র নয়। তো, সে যাই হোক, সেখানে গিয়ে জিগ্যেস করতেই রেঞ্জার সাহেবকে দেখিয়ে দিল। তাঁকে দেখে এবার আমরা সত্যিই ভির্মি খেলাম। আমি নিজে চরম রোগা প্যাংলা ছেলে, আমার সামনে যাঁকে দেখতে পাচ্ছি, সেই রেঞ্জার সাহেব আমার থেকেও বেশি রোগা, স্রেফ ফুঁ দিলে উড়ে যাবেন এ রকম চেহারা, ওই শরীরে সাদা শার্টটাও যেন লাগছে কাকতাড়ুয়ার মতো, একটা বাঁশের তৈরি বেঞ্চিতে বসে চা খাচ্ছেন। বুকে বল এল। গিয়ে মিহি গলায় দাবি পেশ করলাম, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছেলে, বেড়াতে এসেছি, দয়া করে আজ রাতের মতো বাংলোটা যদি দ্যান … উনি ততোধিক মিহি গলায় বললেন, বাংলো তো ও ভাবে দেওয়ার নিয়ম নেই, ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের বড় বড় অফিসাররা যখন আসেন, তখন তাঁদের জন্য এই বাংলো রাখা থাকে। এমনিতে এখানে থাকতে হলে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের লিখিত অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। আর সেই ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অফিস হল গিয়ে শিলিগুড়িতে। সুতরাং … … More জলু – সপ্তম পর্ব

জলু – ষষ্ঠ পর্ব

সবই ঠিক আছে, গোলমালটা বাধছিল আসল জায়গায়। অনেক মারপিট করে টিমোশেঙ্কোর ইঞ্জিনীয়ারিং মেকানিক্সের বই তো জোগাড় হল, বোর্ড টি-ও পেয়ে গেছিলাম, কিন্তু মাথায় যে কিছুই ঢোকে না! আজীবন বাংলা মিডিয়ামের ছাত্র, ইঞ্জিনীয়ারিংয়ে তো বাংলাতে বই হয় না, মেকানিক্সের বই খুললেই কেমন মনে হত পাতার ওপর পিঁপড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্লাসে বেশির ভাগ প্রোফেসরই বাংলায় কথা বলতেন, তাঁদের অবস্থাও যে আমার থেকে খুব ভালো ছিল, এমন নয় – কারণ অন্যান্য ব্যাচের মতই আমাদের ব্যাচেও কয়েকটি অবাঙালি ছেলে ছিল, তারা হাত তুলে নিজেদের বাংলা বুঝতে পারার অপারগতা জানালে তাঁরা বেশ কষ্ট করে ইংরেজিতে শিফট করতেন। … More জলু – ষষ্ঠ পর্ব